অনেকেই ভাবে আমি খুব অহংকারী: সাবিলা নূর

পৌষের দাপটে তটস্থ নগরী। কম্বলের ভেতর থেকে বের হওয়া যেন একপ্রকার অসাধ্য সাধন। তবে কথায় আছে কষ্ট করলে নাকি কেষ্ট মেলে। কথাটি অনেকের জীবনেই সত্য বটে। যেমন ধরা যাক, অভিনেত্রী সাবিলা নূরএর কথা। কনকনে শীতের সকালে উত্তরার আনন্দবাড়ি শুটিং বাড়িতে তার উপস্থিতি। চলছিল পেন্সিলে আঁকা জীবন নাটকের শুটিং। পরিচালনার ভার আদিত্য জনির ওপর। কখনো ইনডোর আবার কখনো আউটডোরে ক্যামেরার আনাগোনা। আর পৌষের ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে লেন্সের সামনে ব্যতিব্যস্ত অভিনেত্রী। তার অভিনয় শৈলীর মুগ্ধতা সমস্ত শুটিং বাড়িকে যেন জীবন্ত করে তুলেছিল। মনে হচ্ছিল- শুটিং নয়, বরং বাস্তবের কোনো ঘটনা প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দৃশ্যপটে। গল্পের চরিত্রকে এমন সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তোলায় বেশ পটু হয়ে উঠেছেন সাবিলা। এটিই তো একজন অভিনয় শিল্পীর সার্থকতা। সেই হিসেবে সাবিলা নূর খুব অল্প সময়েই সার্থক। আর হবেনই বা না কেন, সেই এইটুকুন বয়সেই তো তিনি নিজের ঝাঁপিতে তুলে এনেছিলেন পদ্মকুঁড়ি পুরস্কার। তখন তিনি সবেমাত্র প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে নাচ শিখে পদ্মকুঁড়ি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন ক্ষুদে সাবিলা। তখন কি কেউ ভেবেছিল যে এই ক্ষুদে মেয়েটিই বড় হয়ে ছোটপর্দা মাতাবে? ভাবুক কিংবা না ভাবুক, এখন এটাই সত্য। ২০১৪ সাল থেকে দর্শকদের চোখের মণি হয়ে আছেন অভিনেত্রী সাবিলা নূর। নতুন বছরে নতুন কাজ। এদিকে পরিচালক সঙ্গে এটিই প্রথম কাজ সাবিলার। তাই নাটক ও নতুন বছরের ফিরিস্তিসহ, সাবিলা নূরের হালচাল জানতে প্রিয়.কমের ক্যামেরা তাক করা হয়েছিল সাবিলা নূরের দিকে। শুটিংয়ের ফুরসতে প্রিয়.কমের সঙ্গে আলোচনায় মেতে উঠলেন তিনি। বললেন, এটি আমার এ বছরের প্রথম নাটক, অবশ্যই একটু এক্সাইটেড। কারণ নতুন বছরটি সুন্দরভাবে শুরু করতে চাইরশ্ন ছিল, গত বছর ছোটপর্দায় আপনার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম ছিল কেন? সুদর্শনা অভিনেত্রী সাবিলা নূরের উত্তর, ‘আগের বছরে বেশ কিছুদিন আমি কাজ করিনি। প্রায় ছয়-সাত মাসের মতো। কারণ আমি দেশের বাইরে ছিলাম। আমার বোনের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম, একটা কোর্স করেছি। তো সব কিছু মিলিয়ে বেশ কিছুদিন কাজ করা হয়নি, তাই কোরবানির ঈদের পর পর নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেছিলাম। আমি চাই এটা যেন ক্যারি অন ফরোয়ার্ড হয় ২০১৮ তে। আরও বেশি ডেডিকেশন ও ইমোশন দিয়ে যাতে কাজ করতে পারি, সেই চিন্তার ধারাবাহিকতায় এ কাজটি শুরু করেছি।

পেন্সিলে আঁকা জীবন নাটকের গল্প পছন্দ হয়েছে? গল্পটা খুব সুন্দর, যেহেতু বছরের প্রথম কাজ, তৌসিফ মাহবুব আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তো ওর সাথে প্রথম কাজটা শুরু করতে পেরে ভালো লাগছে। প্রথম কাজ ডিরেক্টর আদিত্য জনির সঙ্গেও। সব কিছু মিলিয়ে ইনশাআল্লাহ ভালোই যাচ্ছে– প্রতিউত্তরে বললেন সাবিলা।পরিচালক আদিত্য জনির সঙ্গে এটাই আপনার প্রথম কাজ। কেমন লাগছে? সুহাসিনী সাবিলা একরাশ হাসির বাণ বইয়ে দিয়ে বললেন, খুবই ভালো লাগছে, খুবই অর্গানাইজড। সব কিছু খুব গোছানো। টাইম ল্যাপ করছে না কোনো। তাই ভালো লাগছে কাজ করছে। তিনি খুব ভালো ডিরেক্টরযদি প্রশ্ন করা হয়, নিজের সম্পর্কে এমন কিছু বলুন- যা কেউ জানে না, কী বলবেন? এবার তার মুখে কিছুটা ভাবুক-ভাবুক ছাপ। তবে পৌষের আকস্মিক ও ক্ষণস্থায়ী শীতল বাতাসের মতোই কিছুক্ষণের মধ্যেই উবে গেল ভাবুক ভঙ্গি। স্বভাবসুলভ হাসি হেসে বললেন, আমাকে দেখে অনেকে ভাবে আমি খুব অহংকারী বা খুব রাগী, কারণ আমি রাগী ক্যারেক্টারগুলো খুব বেশি করেছি। কিন্তু ইন রিয়েল লাইফ আমি অনেক বেশি সেনসেটিভ। আমার ভাগ্য ভালো, কোনো ডিরেক্টর আজ পর্যন্ত আমাকে কোনো বকা দেয়নি। কিন্তু আমি এতটুকু জানি যে, কেউ যদি আমার সঙ্গে একটু জোরে কথা বলে, আমি খুব হার্ট হয়ে যাই, খুব সেনসেটিভ, কান্নাকাটি শুরু করে দিই

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment